Description
কেউ কি ভুলতে পেরেছে সাতের দশকের সেই উত্তাল দিনগুলো! কত যুবকের স্বপ্নের উপর বয়ে গেছিল নকশাল আন্দোলনের ঝড়। কিংবা সাত থেকে আটের দশকের সেই ফুটবল উন্মাদনায় ফুটন্ত শহরের স্বর্ণালি ইতিহাস। তখনও তো হাঁড়ি আলাদা হয়নি ঘরে ঘরে। ক্লাবগুলোতে সুস্থ সংস্কৃতির কলরব। একটি বাঙালি পরিবার। পরিচ্ছেদে পরিপূর্ণ ঘটনাবহুল সংলাপ। আর তার সঙ্গে যদি কোনো তরুণের কণ্ঠে চলকে ওঠে সুগায়ক তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই গান, ‘এলো না… সে তো এলো না, তাই ডুবুরি ডুবুরি মন ডুবেও মুক্তা পেলো না’ নস্টালজিক আবেশ না এসে পারে!
Sutapa Lahiri –
লেখকের অনবদ্য লেখা। পুরোনো দিনের স্মৃতি বিজরিত বহুঘটনাই মনকে টানে।
অরুণিমা চৌধুরী (verified owner) –
#যে_দিন_ভেসে_গেছে_পাঠ_প্রতিক্রিয়া*
অনুপম দাশশর্মা সাহিত্যজগতে পরিচিত কবি হিসেবেই। এই প্রথম তিনি হাত দিয়েছেন উপন্যাসে। ধানসিড়ি থেকে সদ্য প্রকাশিত তাঁর উপন্যাস “যে দিন ভেসে গেছে”।
কবি হিসেবে বিভিন্ন নামিদামি পত্রিকায় প্রকাশিত লেখক হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই অনেক প্রত্যাশা নিয়ে উপন্যাসটি পড়তে শুরু করেছিলাম। অবশ্যই প্রত্যাশা পূরণ করেছেন লেখক।
ঊনিশ শতকের শেষের বিক্রমপুর জমিদার বাড়ি থেকে ছিন্নমূল হয়ে অবিভক্ত ভারতে চলে আসা এক একান্নবর্তী পরিবারের ওঠাপড়া উপন্যাসের মূল বিষয়। সহজ প্রাঞ্জল, ছোট ছোট অধ্যায়ে লেখা উপন্যাসটি কিছুটা সেই সময়ের কলকাতা তথা বাংলার রাজনৈতিক উত্থান পতনের দলিলও বটে। যার বেশির ভাগটাই নকশাল আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া উপন্যাসের এক অন্যতম চরিত্র দিলীপের কার্যকলাপের মাধ্যমে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন অনুপম।
কেন্দ্রীয় চরিত্র অরিন্দম এর চোখ দিয়ে আমরা দেখছি এক সচ্ছ্বল পরিবার উদ্বাস্তু হয়ে কীভাবে জীবনের স্রোতে হাবুডুবু খাচ্ছে। কীভাবে অধীর,প্রতিমার মতো চরিত্র এরই ভেতর শক্ত করে মুঠোয় গোটা পরিবারটিকে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, আবার দিলীপের স্বভাবদোষ ,চারিত্রিক জটিলতা কীভাবে জমি বাড়ি ভাগের কুটিল চক্রান্তে জব্দ করতে চাইছে নিজেরই পরিজনকে।
অরিন্দম এক সংবেদনশীল চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভা, বিচক্ষণ, নিষ্ঠাবান এবং কঠিন সাংসারিক সংগ্রামের নিয়ত যুদ্ধের কাণ্ডারীও। তাঁর শৈশব থেকে সদ্য ফুটি ফুটি অনুভবে আমরা যেন ছবির মতোই দেখতে পাই, জীবনের প্রতিটি ধাপে কীভাবে আসে ভালোমন্দের বোধ, দায়িত্বশীলতা, কিছুটা দুষ্টুমি, কখনও অনুচ্চারিত প্রেম, সদ্য ফুটে ওঠা যৌবনে অফিস কলিগ মহুয়ার সঙ্গে বিনা দাবির সুন্দর বন্ধুত্বও।
অধ্যায়গুলি দীর্ঘায়িত নয়। ছাপার হরফ বেশ বড়। প্রচ্ছদ একদমই যথাযথ। এক একটি অধ্যায় আলাদা করে এক একটি অনুভূতি বা চিত্র।
তবে লেখকের কাছে আমার ব্যক্তিগত অনুরোধ রইল, এই উপন্যাসের একটি পরবর্তী পর্ব উপন্যাস রূপে আমরা পড়তে ইচ্ছুক। অধ্যায় আরেকটু বড় হোক,আরেকটু বর্ণনাময় হোক , কলেবর নাহয় আরেকটু বাড়ুক।
প্রথম উপন্যাসের সম্ভবত প্রথম পাঠ প্রতিক্রি়য়া এটাই। অনেক অভিনন্দন। অনেক অনেক।
অরুণিমা চৌধুরী।