Sale! 20%
OFF

Ami Bari Firini

(20 customer reviews)

120.00 96.00

Author : Rajaditya Banerjee
Year Of Publication :
2021
Pages :64
Binding : Hardcover
ISBN : 978-93-91051-10-5

Out of stock

FREE Delivery on orders over ₹999.00

20 reviews for Ami Bari Firini

  1. Reshmi Mukherji

    Very powerful and intense. A striking impact. Indeed a reader’s delight. Eagerly looking forward to more poems from the brilliant poet.

  2. Sutapa Roychoudhury

    সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে থাকা একজন কবি , চলচ্চিত্র নির্মাতার কবিতা ।
    অসাধারণ বললে কম বলা হবে । এই সময়ের শ্রেষ্ট কবিতা ।
    কবির আরও লেখা পড়তে চাই ।
    আপনাদের ধন্যবাদ এই রকম প্রচারবিমুখ গুণী মানুষের কাজ বাংলার মানুষের কাছে তুলে ধরলেন ।

  3. Sutapa Roychoudhury

    ৫৩টি দুর্দান্ত কবিতা । অন্যতম প্রিয় ( যেগুলি অচিরেই কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে ঘুরবে )
    ” আমি একটা যুদ্ধ লড়ছি
    বলছিনা আমাকে সমর্থন করো
    শুধু বলছি ভেবে দেখো একটা মানুষকে কেনো যুদ্ধ লড়তে হয় ”

    “আমি বাড়ি ফিরিনি
    তুমি অপেক্ষা করোনি
    অথচ দ্যাখো প্রতিদিন নিয়ম মেনে
    অপেক্ষা করে চলেছে এক ফালি অন্ধকার ”

    আজ কয়েকবার আমরা বন্ধুরা কিনতে এসেছিলাম ওয়েবসাইটে , আউট অফ স্টক দেখাচ্ছে ।
    আবার ওয়েবসাইটে আসবো এবং আরো কয়েকটা কপি কিনবো । পেয়ে যাবো জানি ।

  4. diptendu jana

    WONDERFUL

  5. diptendu jana

    চমত্কার

  6. Sutapa Roychoudhury

    এই সময়ের শ্রেষ্ট কবিতা — একটুকুও অবাক হয়নি বইটি আউট অফ স্টক । কিনতে পারিনি ।
    অনেক ধন্যবাদ ধানসিঁড়িকে ও কবিকে ।

  7. Subir Sen Gupta

    একাধারে কবি,নাট্যকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক একজন মানুষ খুব কম দেখা যায়! ‘আমি বাড়ি ফিরিনি’ কবিতার বইতে সমাজ জীবনের যে যন্ত্রণার প্রকাশ পেয়েছে তাতে পাঠক অনেক ক্ষেত্রেই কবির সাথে একাত্ম হতে পেরেছেন, পাঠকের মনে হয়েছে এই কথাগুলো যেন তাঁর জীবনের চালচিত্রকে তুলে ধরেছে! বইটা পড়তে গিয়ে বারবার আমার এই কথাগুলোই মনে হয়েছে। এটাই বোধহয় কবির সার্থকতা।
    আমার খুব ভালো লেগেছে, মানুষের অসহায়তা নিয়ে কবির যন্ত্রণার স্ফুরণ ঘটেছে।

    ” দু-চোখ বুজে ভিসুভিয়াস তখন আমার বুকে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে।” কবিতা : খিদের টিকা
    “……১৫১ কিলোমিটার ছেঁড়া চটিতে হাঁটলে /কত শতাংশ জল খেলে ডিহাইড্রেশনকে জয় করা যায়?” কবিতা : ডিসকানেক্টেড
    খুব ভালো লাগলো। সমাজের নিদারুণ যন্ত্রণার সঙ্গে কবি একাত্ম হয়ে উঠেছেন প্রতিটি কবিতায়! সকালে পড়লাম, আবার পড়তে হবে।
    আমি পড়ছি, বন্ধুদেরও পড়তে অনুরোধ করছি

    কবি রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
    একইসাথে আগামীর শুভকামনা।

  8. Subir Sen Gupta

    সদ্য হাতে আসা কবিতার বই থেকে আমার খুব প্রিয় একটি কবিতা।
    ****************”শান্ত বটগাছ”***************
    আদালত না আয়না কোনটা চেয়েছিলে?
    রোদ মরে যাওয়া বিকেলবেলায় লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালের জানলা দিয়ে দেখি।
    আজও পরিপাটি করে সাজানো আছে চেক জামা আর সেই শাড়িটা
    প্রাচীরটা ভাঙা যায় বিশ্বাস করো
    সব পাতা ঝড়ে যায় গোপনে
    ভোরের কুয়াশা ঠেলে সময় ফুরিয়ে আসে মান্থলি টিকিটের মতন
    তুমি প্রতিশব্দ খুঁজেছিলে
    আমি বলেছিলাম জনহীন হল্ট স্টেশন
    মোমবাতি নয়
    মিছিল নয়
    আসলে আমি একটা শান্ত বটগাছ খুঁজেছিলাম।
    আমি বাড়ি ফিরিনি —
    রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়।

  9. Leena Ghosh

    চারিদিকের অস্থিরতা, অশান্ত, সংকটময় সময়ের মাঝে কবি সম্ভবত শান্তির আশ্রয় খুঁজছেন…… আমরা সবাই তাই। খুবই প্রাসঙ্গিক লেখা।

  10. Subir Sengupta

    আমার কবিতা ভালো লাগে, এই বইটাও ভালো লেগেছে। সমাদৃত হওয়া উচিত।

  11. Sukla Basu

    চমৎকার লাগলো

  12. Subhamay Mujherjee

    অপূর্ব।

  13. Subir Sengupta

    কবিতার বইতে সব কবিতাগুলোই খুব সুন্দর

  14. Debashree Banerjee

    খুব সুন্দর ভাবনায় লেখা , ভালো লাগলো

  15. Prabal Banerjee

    খুব সুন্দর।

  16. Subir Sengupta

    এই বইটাও ভালো লেগেছে। সমাদৃত হওয়া উচিত।

  17. Lena Ghosh

    চারিদিকের অস্থিরতা, অশান্ত, সংকটময় সময়ের মাঝে কবি সম্ভবত শান্তির আশ্রয় খুঁজছেন…… আমরা সবাই তাই। খুবই প্রাসঙ্গিক লেখা। আর একটু সাবলীল হতে পারত

  18. মমতা সরকার দাস

    এক্ষুনি হাতে পেলাম “আমি বাড়ি ফিরিনি” বইটি।বেশ কয়েকটা কবিতা পরেও ফেললাম।নিঃশব্দ অসুখ,সাইলেন্ট জেনোসাইড। ভালো লাগলো স্যার।
    দূরত্ব কখনো কখনো যে এক অসীম মুগ্ধতা হয়ে দাঁড়ায় তা স্পষ্টত বুঝলাম।আপনার লেখা এই কবিতা টি আমার বিশেষ ভাবে পছন্দ।আমিও যখন পুজোর ঠিক পরেই নিজের বাড়ি ফিরে যাই তখন ছাতিমের গন্ধ আমার সঙ্গী হয়।সেই গন্ধ বহু বছরের চেনা।
    সত্য উপলব্ধি,ভাবাবেগ,মতাদর্শ আর বাস্তব জীবনের সমস্ত দিক সমূহ যেন একসাথে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে স্যার আপনার “আমি বাড়ি ফিরিনি” বইটি তে।আসলে প্রতিটি শব্দই যেন বাইরে এসে জানান দিতে চাইছে যে জগৎ আমরা বয়ে নিয়ে চলেছি তাকে সারাটা জীবন ভার হিসাবেই বইতে হবে।আর কয়েকজন মানুষ আছেন যাঁরা বাস্তবের নির্ধারিত হিসেব কে একেবারেই নস্যাৎ করে বাউল স্বত্ব নিয়ে স্বাধীনভাবে এগিয়ে চলেছেন। মানুষের মন নানা প্রক্ষোভ এর ডালি দিয়ে সাজানো।তার মধ্যে একটি “ভালোবাসা”। সেই সুন্দর অনুভূতির মহিমা আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে আপনার “কাছে দূরে “কবিতায়। যে যত কাছে সে হঠাৎ ই হয়তো দূরে চলে যায় আর এতটাই দূর যে কোনোভাবেই কাছে ফেরার সম্ভবনা থাকে না।অপূর্ব অনুভূতি।
    আমাদের মধ্যে থাকা সেই সুন্দর অনুভূতি গুলোকে ফিরিয়ে আনার জন্য আরো অনেক অনেক লিখুন স্যার।

  19. দেবাশিষ ভট্টাচার্য

    “আমি বাড়ী ফিরিনি”
    বইটি পড়ে এক অদ্ভুত অনুভবের মুখোমুখি হলাম।
    কবি রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় নিপুনভাব শব্দশিল্পের
    যে ইমারত সৃষ্টি করেছেন,সে ইমারত বহন করে থাকবে বিপন্ন, ক্ষতবিক্ষত,অস্থির সময়ের জলন্ত দলিল।
    এক অনন্ত প্রতিক্ষার জিজ্ঞাসা সে কখন বাড়ী ফিরবে?

    এই সময়ের কবিদের থেকে ভিন্ন পথে বিচরণ করে
    কবি পাঠকদের দাঁড় করিয়াছেন প্রেম,অপ্রেম,বিশ্বায়ন,অস্তিত্বসংকট,
    আর যান্ত্রিক জীবনযাপনের।

    তবুও সঠিক করে কী কিছু বলে গেলো এই
    আখরমিছিল?রেখে গেলো ভাবনার ক্যানভাসে
    নস্টালজিক কিছু মুহুর্ত আর বোবা অনুভব।

    বর্তমান সমাজ সংসার আজ আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে
    ক্ষয়মুখের আবহে।হারিয়ে যাচ্ছে মানবতা।মৃতপ্রায়
    বোধ।তাই যুদ্ধ,সমর্থন হীন একটা যুদ্ধ লড়ার কথা বলা।

    “আমি একটা যুদ্ধ লড়ছি
    বলছি না কাউকে সমর্থন করতে”

    লড়তে হবে ঘুড়ে দাঁড়াতে হবে।ভাঙ্গতে
    হবে অন্ধকারের বৃত্ত।

    “আমি বাড়ী ফিরিনি
    অপেক্ষা করোনি তুমি”

    আমরা অপেক্ষায় রইলাম কবির আরও
    এমন মন ছুঁয়ে যাওয়া কব্যগ্রন্থের জন্য।
    যা আমাদের চেতনায় চৈতন্য আনবে।

    বইটি সমস্ত কবিতাপ্রেমী মানুষের সংগ্রহের তালিকাভুক্ত
    হবে এই আশা রাখি।

    আর ধানসিড়িকে অশেষ ধন্যবাদ এমন একটি মনছুঁয়ে
    যাওয়া কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের জন্য।
    ২৮॥৯॥২০২১

  20. Lipika Ghosh (verified owner)

    আমি বাড়ি ফিরিনি / রাজাদিত্য ব্যানার্জি। পাঠ প্রতিক্রিয়া :

    আমি বাড়ি ফিরিনি / রাজাদিত্য ব্যানার্জি
    সিনেমা শেষ হয়ে গেছে। পর্দায় স্ক্রল করে যাচ্ছে যাবতীয় নাম, কারিগরী সহায়তা থেকে কৃতজ্ঞতা স্বীকার অবধি। কানে বেজে যাচ্ছেন johan Sebastian Bach …. শেষ লাইনটি স্ক্রল করে উপরে উঠে গেল। তার ঠিক আগের লাইনে আবছা লেখা স্ক্রিপ্ট রাইটিং, স্ক্রীন প্লে, ডিরেক্টর & অভিনেতা রাজাদিত্য ব্যানার্জি । লাস্ট লাইন —- ‘ আমি বাড়ি ফিরিনি ‘।

    হলের আলো যথা জ্বলে যায়। দর্শক নেভানো পর্দার দিকে তাকিয়ে আছেন। নিশ্চুপ। দেখছেন নীল শাড়ি পরা মেয়েটি হেঁটে চলেছে। আর একটি মানুষ তার বাবাকে বলছে
    “আমার নির্মিত সিনেমা
    টু অর থ্রি থিংস ইউ ডোন্ট নো অ্যাবাউট মি”।
    নীল শাড়ি পরা মেয়েটি হেঁটে চলেছে আবছা হতে হতে কোনো ঠিকানা বিহীন অনিশ্চিতে। ” রোগা পায়ের মেয়েটির ব্যাগে অপ্রকাশিত কবিতার পান্ডুলিপি “।
    দর্শক স্থির এবং বড্ড নিশ্চুপ। সিনেমা টা কি সত্যিই শেষ হয়ে গেছে? সিনেমা টা কি আদৌ শেষ হবার?

    কথা বলছিলাম একটি কবিতার বই প্রসঙ্গে। বই এর নাম ” আমি বাড়ি ফিরিনি “, কবি – রাজাদিত্য ব্যানার্জি, প্রকাশক ‘ধানসিঁড়ি ‘। ৬৪ পাতার বই। হার্ড কভার। প্রচ্ছদ চিত্র – প্লাবন দাস। প্রচ্ছদ রূপায়ন – সেঁজুতি বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম প্রকাশ – জুলাই ২০২১
    বই টি সংগ্রহের মাধ্যম – dhansere.com, flipcart
    বাংলাদেশ পরিবেশক – খড়িমাটি, ৩৫ মোমিন রোড, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ মোবাইল – +৮৮০১৭১১৯০৩২১২
    মার্কিন যুক্তরাস্ট্র পরিবেশক – মুক্তধারা
    মোবাইল – +১৭১৮-৫৬৫-৭২৫৮ এবং +১৩৪৭-৬৫৬-০৫১০
    ধন্যবাদ ধানসিড়ি প্রকাশনা কে প্রতিটি পৃষ্ঠায় একটি করে কবিতা রাখার জন্য। নচেৎ ‘আমি বাড়ি ফিরিনি ” কবিতার বইটির যথাযথ পাঠ খুব কঠিন হয়ে পড়ত। কারন কবিতা গুলি সমকালীন কবিতা লেখালেখির থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। বইটির গুণগত মান অপ্রত্যাশিতভাবে খুব ভালো। অত্যন্ত যত্ন সহকারে বইটি ছাপা ও প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে নিজস্ব একটি অবস্থান যে ধানসিড়ি প্রকাশনার আছে তা বোঝা যায়।
    বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে – রাজাদিত্য ব্যানার্জি’র দাদা –
    প্রয়াত প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় কে
    বাবা – প্রয়াত প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক, আনন্দমেলার প্রাক্তন সম্পাদক ও ফিলম মেকার
    দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় কে
    মা – মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় কে।

    কৃতজ্ঞতা স্বীকার –
    রেশমি মুখার্জি
    রিয়ান মুখার্জি
    মিরানা মুখার্জি

    প্রযুক্তি সহায়তা —
    শমিতা ঘোষ

    ধন্যবাদ জ্ঞাপন –
    স্বপ্নকমল সরকার
    চিরন্তন ভট্টাচার্য
    মহুয়া ভট্টাচার্য
    বর্নালী গুপ্ত
    লাভলী ঘোষ রায় ব্যানার্জি
    জয়দীপ ঘোষ
    সুদর্শনা ভট্টাচার্য
    মৌমিতা চক্রবর্তী
    শুভ বন্দ্যোপাধ্যায়

    পাঠক হিসেবে আমার বদভ্যাস কবিতার বই এর শেষ পাতা মানে শেষ কবিতা থেকে পড়া শুরু করা। প্রথম পাতায় অর্থাৎ প্রথম কবিতায় পৌঁছোনোর পর আবার শুর থেকে শেষ অবধি পড়া। এভাবেই পড়েছি বইটিকে। যদিও পড়া শেষ হয়নি। যদিও পড়া শেষ হবার নয়। যেমন কিনা প্রথম প্যারাগ্রাফে লেখা সিনেমাটি কখনও শেষ হবার নয়। নীল শাড়ি পরা মেয়েটি ক্রমাগত আবছা হতে হতে হাঁটতে থাকবে আর একটি মানুষ তার বাবাকে তার সিনেমা সম্পর্কে কিছু কথা অনুচ্চ স্বরে বলতে থাকবে। লেখার শুরু তে হঠাৎ কবিতার বই না বলে সিনেমা কেন বললাম! এমন একটি কবিতার বই যা কিনা একটি ১২৫ মিনিটের সিনেমা বলে বোধ হয়। একটার পর একটা দৃশ্য। অথবা কবিতা। ” পরবর্তী স্টেশন স্বপ্ন
    দরজা ডান দিকে খুলবে ” (খিদের টিকা) কাট টু “আমি বাড়ি ফিরিনি / অপেক্ষা করোনি তুমি / অথচ দ্যাখো প্রতিদিন নিয়ম মেনে অপেক্ষা করে চলেছে একফালি অন্ধকার” (আমি বাড়ি ফিরিনি) ।

    “মৃত্যুর কথা বলতে হবে কেন সব সময়ে?
    কেউ কি আছে যাকে বলতে পারি
    হাহাকার বুকে নিয়ে কবিতা লেখা আমার জীবনধর্ম নয়……

    …. অন্ধকার পেরেক অপেক্ষা করে
    কখন নিজের হত্যার দৃশ্যটা টাঙিয়ে রাখব আমি ” ( কাফকায়েস্ক প্ল্যানেট)
    সাদা কালো, কালো সাদা হতে হতে আমাদের পৃথিবীটা কখন যে ধূসর হয়ে গেছে, ‘আমি বাড়ি ফিরিনি ‘র প্রতিটি কবিতায় সেই মেটামরফোসিস প্রত্যক্ষ। ধূসর কি দুঃখ, বিষাদের রং? আদৌ না। পোড়া ছাইয়ের রং। আমাদের জীবনের হাসি আর কান্নার পিছনে অন্য কিছু লুকিয়ে আছে, কিছু ক্ষত কিছু পোড়া দাগ যা কখনও প্রকাশ্যে আনা সম্ভব না। হয়ত সবাই জানে হয়ত সবাই সব কিছু জেনে গেছে তবু কিছুতেই প্রকাশ্যে না আনা এক অসম্ভব যন্ত্রণার রং ধূসর। “আমি বাডি ফিরিনি ” র প্রতিটি দৃশ্য অর্থাৎ কবিতা ধূসর। কুয়াশা আর ধোঁয়াসা মিশ্রিত আপাত অস্পষ্ট দৃশ্য গুলো আসলে বড্ড রকমের স্পষ্ট পোড়া জীবনের কথা বলে। কবিতা গুলি আত্মকথনের মত মনে হলেও একটা সময় পাঠকের নিজস্ব জীবন কথায় পর্যবশিত হয়। এখানেই দৃশ্য গুলো অর্থাৎ কবিতা গুলো বা বলা ভালো দৃশ্যকাব্য গুলোর সাফল্য। আবেগের সংযত প্রকাশ, শব্দচয়ন, একটুও বাড়তি কথা না বলা, বরং অনেক কথা না বলেও প্রচুর কথা বলে দেওয়া প্রতিটি কবিতাকে সুগঠিত করেছে। আমাদের হাতে সময় খুব কম। স্মার্ট ফোন আর নেট দুনিয়ার তামাম আকর্ষণ আমাদের সময় ফুরিয়ে দিয়েছে। সেখানে পাঠককে দিয়ে একটি হার্ড কভারের চার ফর্মার কবিতার বই পড়িয়ে নেওয়া, একটুও স্কিপ না করে, খুব কঠিনতম কাজ। একটা না শেষ হওয়া সিনেমা, পর্দা পরে গেলেও দর্শক নিজের মতো করে সিনেমা টা দেখা চলেছে।
    “হে কবি আজ কোন রঙিন চশমা টা পড়ে আছ?
    শুনতে পাচ্ছ? দেখতে পাচ্ছ কিছু অন্য ব্রহ্মান্ড থেকে?
    …….
    দূর থেকে কেমন লাগছে মানুষের সিনেমাটা? ” (সাইলেট জেনোসাইড)
    প্রয়াত চিত্র পরিচালক বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় কে উৎসর্গ করে লেখা কবিতাটি। ‘মানুষের সিনেমা”। অসাধারণ শব্দচয়ন। না থামা একটা ধূসর রঙের ফ্রেম বন্দী সিনেমা।
    “সযত্নে তুলে রেখেছি তোমার একটা চুল।
    চুলটাকে স্পর্শ করলাম।
    ঠিক এতটাই তোমার কাছে আসতে পেরেছি।
    বড্ড কাছে তবুও অনেকটাই দূরে সম্বৃতা ” (কাছে দূরে)
    কে এই সম্বৃতা? একটা ক্ষত বিক্ষত অভিজ্ঞতা। যা কখনও মুছে যাবে না। ক্ষত বিক্ষত অথচ তীব্র ভালোবাসা ও যৌনতার স্বাদ এই সম্বৃতা। যা কে বারবার ভালোবাসতে ইচ্ছে করে কিন্তু কিছুতেই ভালোবাসা যায় না। সম্বৃতা কি আমাদের ক্রম-ধূসর হতে থাকা জীবন। যাকে আঁকড়ে ধরতে চাই কিন্তু আবার চাই ও না।
    পুরো সিনেমাটায় ধুসর রঙের পাশাপাশি খেলা করিয়েছেন আরেকটি রং। নীল। কুয়াশা আর ধোঁয়াসার মাঝে একটা তীব্র আকাঙ্খার মতো নীল রং খেলে গেছে স্ক্রীন জুড়ে।
    “অস্পষ্ট কুয়াশার মাঝে আমি নীল শাড়িটা দেখেছিলাম ”
    …….
    মেয়েটির উন্মুক্ত পিঠে আমি দুটো-তিনটে বিন্দু আঁকলাম।
    ওর পিঠে নরম করে বিন্দুগুলোকে জুড়ে দিয়ে বললাম,
    —- তোমার সঙ্গে, এই ভাবে…” ( শেষ অথবা শুরু)
    কে এই নীল শাড়ি পড়া মেয়েটি? স্বপ্ন? অথবা সেই বাস্তব যাকে হাতের মুঠোয় পেয়েও আঁকড়ে ধর‍তে পারিনা। অথচ ক্ষতস্থানে প্রলেপের মতো নীল রং তার নরম স্পর্শ বুলিয়ে যায়। একটা সুন্দর সকাল বা একটা সোনালী বিকেল। আর কিছু না। যা কিনা ক্ষণস্থায়ী। নীল শাড়ি পড়া মেয়েটি হাঁটতে হাঁটতে আবছা হতে থাকে।

    “Never try to convey your idea to the audience – it is a thankless and senseless task. Show them life, and they’ll find within themselves the means to assess and appreciate it.”

    Andrei Tarkovsky

    ‘আমি বাড়ি ফিরিনি’ তে মূলত ৬ টি চরিত্র।

    Six Characters in Search of an Author by

    Luigi Pirandello মনে পড়ে গেল। কবি বা রাজাদিত্য ব্যানার্জি, সম্বৃতা, নীল শাড়ি পরা মেয়েটি, দাদা বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, বাবা দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং পাঠক। সিনেমাটার মধ্যে কখন ঢুকে পড়েছি। প্রতিটি দৃশ্যে পাঠক সক্রিয় ভূমিকায়। সব দৃশ্যই আমাদের দৃশ্য, সব কবিতাই আমাদের কবিতা। খুব কঠিন কাজ কত সহজে করে ফেলেছেন রাজাদিত্য ব্যানার্জি। সিনেমা, স্বপ্ন, কবিতা, স্ক্রীন প্লেই মিলেমিশে একাকার। খুব মেলানকোলিক টাইপের মধ্যে দিয়ে ধীর লয়ে এগোনো একটা মস্ত বড় জীবনের সিনেমা। লং শট। অতুলনীয় সিনেমাটোগ্রাফি।
    “আজকের সিনেমা ভালোবাসা ও গঙ্গা নদী
    পর্দা দু -ভাগে ভাগ করে
    সিনেমা শুরু হল।… ”
    কাট টু “দূরত্ব এক অসীম মুগ্ধতা। ”
    সত্যি কি তাই? দূরত্ব কখনও মুগ্ধতা হতে পারে? দূর মানে তো বিচ্ছেদ, ব্যাথা, ব্যবধান, এবং পরিশেষে একটা ছেদ বা শেষ হয়ে যাওয়া কোনো সম্পর্ক বা ঘটনা বা দৃশ্য। এই উক্তি একটি অসীম মুগ্ধতার পরিবর্তে অসীম দ্বিধায় ফেলে দেয়। confusion। যা কিনা আজ আমাদের জীবনের সব চেয়ে বড় সত্য। এই confusion ই ‘আমি বাড়ি ফিরিনি’র থীম সং।

    সিনেমা অনেকক্ষন হয়ে শেষ হয়ে গেছে। আমরা তবু দেখতে পাচ্ছি নীল শাড়ি পরা মেয়েটি হেঁটে চলেছে। আর একটি মানুষ তার বাবার সঙ্গে অনুচ্চ স্বরে তার সিনেমা সম্পর্কে আলোচনা করছে।
    বেজে চলেছেন Johan Sebastian Bach….
    কবিতার বই টির নাম -“আমি বাড়ি ফিরিনি “। লেখক – রাজাদিত্য ব্যানার্জি ।
    (রাজাদিত্য ব্যানার্জি – সিনেমা পরিচালক, অভিনেতা ও কবি। পৃথিবীর নানান প্রান্তে ঘুরে বেড়ান নিজের সিনেমা ও থিয়েটার নিয়ে। তাঁর নাট্যগোষ্ঠী র নাম ‘ব্যাকবেঞ্চার্স ‘,। প্রথম পূর্ন দৈর্ঘ্য সিনেমা ‘ডেথ সার্টিফিকেট’,বহু আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত ও সমাদ্রিত। বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য তথ্যচিত্র নির্মান করেছেন তিনি)

    #পাঠপ্রতিক্রিয়া #লিপিকা_ঘোষ

Add a review

Your email address will not be published. Required fields are marked *