Description
প্রতিটি সম্ভাবনার আড়ালে তৈরি হতে থাকে একেকটি নতুন গল্প। মধুসূদন সরস্বতী, আমরা সবাই প্রায় ভুলে গেছি তাঁকে। কতবছর আগে সেই আশ্চর্য জীবন ঘিরে রচিত হয়েছিল ইতিহাসের কিছু অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। অদ্বৈতবাদী সন্ন্যাসী তিনি। হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত অদ্বৈত বেদান্তের মূল সুর। আবার তিনিই ইতিহাসের এক যুগ সন্ধিক্ষণে হিন্দু ধর্মকে বিধর্মীদের হাত থেকে রক্ষা করতে অস্ত্র তুলে দিলেন নাগা সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীদের হাতে। শুরু হল ধর্মীয় হিংসার রক্তাক্ত কাহিনী,যা আজও বহমান আমাদের দেশে। অসম্ভব এক দ্বন্দ্বে ক্ষত বিক্ষত হল তাঁর হৃদয়। এই দ্বন্দ্বই উপন্যাসের মূল সুর। বাল্যে মধুসূদন সরস্বতী হতে চেয়েছিলেন কবি। তাঁর বাল্য নাম কমলনয়ন। কিন্তু তিনি কবি হয়ে উঠতে পারলেন না। চেয়েছিলেন হতে নৈয়ায়িক,তাও পারলেন না। যে অদ্বৈতবাদ প্রতিষ্ঠিত তাঁর হৃদয়ে,তাও কি পারলেন মেনে চলতে সম্পূর্ণ ? তাহলে সত্যিই কি প্রয়োজন হত সন্ন্যাসীর হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার ?
এইসব প্রশ্নের সামনে ঔপন্যাসিক সন্মাত্রানন্দ ব্যবহার করলেন তাঁর সেরা আয়ূধ, মানবিক দর্শন। যা হয়ে উঠতে চেয়েছিলেন মধুসূদন সরস্বতী অথচ হয়ে উঠতে পারেননি সেইখান থেকে জন্ম নিল একেকটি নতুন চরিত্র, কাহিনী। রচিত হল আখ্যানমঞ্জরী। কিন্তু কোথায় তৈরি হল সেই গল্প ? সন্মাত্রানন্দ বলেন সমান্তরাল মহাবিশ্বে। তাদের কি দেখা হয় কখনও ? হলে কী হয় ? এই প্রশ্ন পাঠক তাড়া করবে আপনাকে। কিন্তু ছুটিয়ে মারবে না থ্রিলারের মতো। আপনি পালকের মতো ভেসে বেড়াবেন,দুদণ্ড বিশ্রাম নেবেন ঊনাসিয়া গ্রামের পথের ধারে কোনও প্রবল চৈত্রের মধ্যাহ্নে!
বৈকাল হইয়া আসিবে তখন। চারিধার আমোদিত ঘেঁটু ফুলের সৌরভে। দূর হইতে ভাসিয়া আসিবে হয়তো কোনও অদৃষ্টপূর্ব পাখির স্বর। মলয় বাতাসে অলৌকিক বলিয়া ভ্রম হইবে আবিশ্ব চরাচর।
কে জানে আপনার হয়তো দেখা হয়ে যাবে বালক কমলনয়নের সঙ্গে! তার কোলে এক অপূর্ব শ্রীমণ্ডিত সজল বিগ্রহ, কৃষ্ণকিশোর। সেই কৃষ্ণকিশোর আপনাকে শুধোবে
–পথিক,ঊনাসিয়া গ্রামে তুমি কী করিতেছ ?
আপনি,হে পাঠক,আপনার হাতে ধরা “ছায়াচরাচর” বইখানি দেখিয়ে তখন হয়তো বলবেন,
–আগামী কালের এক লেখক তোমার কথা যে লিখেছেন বড় মায়ায়,বড় যত্ন করে! আমি তাই পড়ছি। তোমাকে,তোমাদের পড়ছি!
মুচকি হাসবেন কৃষ্ণকিশোর। চরাচর জুড়ে নেমে আসবে তখন চৈত্র মাসের অপরূপ সন্ধে। ঘনিয়ে উঠবে ছায়া! রচিত হবে ছায়াচরাচর!
Reviews
There are no reviews yet.